সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

অবহেলা (৭ম পর্ব)






অবহেলা (৭ম পর্ব)

চারি দিকে ফুটে উঠেছে ভোরের আলো। পাখিদের কিচির মিচির শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো মিলির। কাল রাতে জোছনা দেখতে দেখতে কখন যে বারন্দার ইজি চেয়ারে ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়াল নেই।
আজ কেনো যেনো তার কবিতা লিখতে ইচ্ছে করছে। ইচ্ছে করছে সব না বলা কথা গুলো অভ্রকে বলে দিতে। তবে সে তো আর অভ্র নয় যে হাঁটতে হাঁটতে কবিতা লিখে ফেলবে। কিছুক্ষন বসে বসে কল্পনার জগতে পদচারন করে মিলি। খুঁজতে থাকে ছন্দ।
তবে সব গুলো কথা ছন্দে মিলছে না। ঘর থেকে খাতা এনে লিখলো ৮ লাইনের একটি কবিতা।

আজ অভ্রকে কবিতাটা পাঠাবে সে। মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে লিখে ফেললো। কয়েকবার পাঠাতে গিয়েও পাঠাতে পারে নি। কেমন যেনো একটা ভয় কাজ করছে তার মাঝে। অভ্রকে হারানোর ভয়। কিছুক্ষন পর ম্যাসেজটা পাঠিয়েই দিলো। অপেক্ষা করতে থাকলো ম্যাসেজ এ উত্তর এর। তবে উত্তর এলো না।


বিকেলেঃ
________________

অভ্র বসে আছে লেকের পাড়ে। আজ তার হাতে কবিতার ডায়েরী নেই। বিকেলের সোনালী আলো গড়িয়ে পড়ছে লেকের পানিতে। সে পানিতে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখছে অভ্র।

“কেমন আছো অভ্র?”
অভ্র ফিরে তাকালো। মিলি দাঁড়িয়ে আছে।
অভ্রঃ“ভালো। বসো...”
মিলিঃ“ম্যাসেজটা পেয়েছো?”
অভ্রঃ“হুম। দেখেছি।”
মিলিঃ“তো...”
অভ্রঃ“মিলি। একটা কথা বলবো?”
মিলিঃ“বলো...”
অভ্রঃ“দেখো মিলি। একে ভালোবাসা বলে না। একে বলে মোহ। এখন তুমি মোহের ঘোরে বলছো ভালোবাসি। তবে যখন মোহ কেটে যাবে, তখন আর ভালোবাসাটা থাকবে না।”
মিলিঃ“আমি তো মোহের ঘোরে বলছি না।”
অভ্রঃ“তা সবার মতে তো আমি একজন বিরক্তিকর মানুষ। তা আমাকে তোমার ভালো লাগলো কি ভাবে?”
মিলিঃ“তুমি মোটেও বিরক্তিকর নও। তুমি এমন একজন মানুষ যে সবার থেকে আলাদা। সবাই এক পথে চলে। তবে তোমার পথ ভিন্ন। তোমার নিজের পথটা সবার চেয়ে আলাদা।”
অভ্রঃ“হতে পারে। তবে এ পথে তুমি যে আমার সাথী হতে চাচ্ছো, তা কি বোকামি নয়?”
মিলিঃ“মোটেও বোকামি নয়।”
অভ্রঃ“নিজের ভালোবাসাটা কে এভাবে অপাত্রে দান করো না।”
মিলিঃ“যে এতো সুন্দর করে লিখতে পারে, সে কখনো অপাত্র হতে পারে না। যার মাঝে একটা কাঁচের ন্যায় স্বচ্ছ হৃদয় ও শিল্পি মন আছে সে কখনো অপাত্র হতে পারে না।”
অভ্রঃ“মিলি! তুমি ভুল করছো। আমি হলাম তারাশংকর বন্দোপাধ্যায়ের কবির মতো। কোন এক গল্পের চরিত্র। এখন তুমি মোহের ঘোরে এসব বলছো। যখন মোহ কেটে যাবে, তখন আর এই ভালোবাসাটা থাকবে না।”
অভ্র হেঁটে চলে যায়। মিলিও আর কিছু বলে না। বসে বসে তার চলে যাওয়া দেখে।


To be continued..................

[বিঃদ্রঃ উপন্যাসের পরের অংশটি কাল এই ব্লগে প্রকাশিত হবে]


লেখকঃ জোহেব।


শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

ইতিহাসের পাতায় এক ফোঁটা অশ্রু







ইতিহাসের পাতায় এক ফোঁটা অশ্রু
-----------------------------------------------------------------------------
বাদশাহ আকবর বসে আছেন আসনেবছরের প্রথম দিনরাজ্য জুড়ে বয়ে চলেছে আনন্দের বন্যাসরাবের নেশায় প্রাসাদের সবাই মোহগ্রস্থ
জলসা ঘরে হঠাৎ করে ধোঁয়াশোনা যাচ্ছে নুপুরের ধ্বনিযা ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছেধোঁয়া যতই কমছে ততই সকলের সামনে সব দৃশ্যমান হচ্ছেকেউ এক জন দাঁড়িয়ে আছে মাথায় ঘোমটা দিয়েহঠাৎ তার মুখ থেকে গানের সুর শোনা গেলো
বড়ই মধুর সুরসকলে তাকিয়ে আছে সামনে আর মুগ্ধ হয়ে শুনছে সেই গানের সুর যা হৃদয় কেড়ে নেয়
আনার কলির মাথা থেকে ঘোমটা উঠে গেলোশুরু হল নাচের ধুন
আনার কলির ঘোমটা গিয়ে পড়লো শাহজাদা সেলিমের কাছেশাহজাদা মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছে আনার কলিকেএ যেনো কোন সর্গের অপ্সরীযার সুরেলা কন্ঠ আর মোহনীয় সৌন্দর্য কেড়ে নিলো শাহজাদার হৃদয়যার সৌন্দর্য দেখলে শুধু মন চায় চেয়ে থাকতেযাকে চাঁদের উপমা দিলেও কম হয়
সেদিন শাহজাদা সেলিমের পলক নড়লো নাসে যে মোহগ্রস্থ হয়ে পড়েছে
শাহজাদা মনে মনে আনারকলি কে জীবন সঙ্গী হিসেবে পেতে চাইলোতবে আনারকলির হেরেমে শুধু সম্রাট আকবর ঢুকতে পারতেনসেখানে অন্য কারো ঢুকা ছিলো নিষেধ
তবে শাহজাদাকে যে আনারকলির সাথে দেখা করতেই হবেতাই, সেলিম হেরেমের পাহাড়াদারদের ঘুষ দিয়ে আনারকলির সঙ্গে দেখা করলো
আনারকলির ও শাহজাদাকে ভালো লাগলোতবে তাদের দুজনকে যে কেউ মেনে নেবে না যেনেও তারা লুকিয়ে প্রেম করতে লাগলো
তখন আনারকলির বয়স ৪০ এর কাছাকাছিআর সেলিমের বয়স তখন ৩০
তবুও তাদের ভালোবাসার মাঝে বয়স কোন দিন বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় নি
অন্যদিকে, সম্রাট আকবর শাহজাদা সেলিমের ঘনঘন হেরেমে যাওয়া দেখে সব বুঝতে পেরেছিলেন
এক দিন সেলিম হেরেমের পাহাড়াদারকে দিয়ে চিঠির মাধ্যমে আনারকলিকে রাতে নদীর পাশের মন্দিরের কাছে ডাকলআনারকলিও লুকিয়ে শাহজাদার সঙ্গে দেখা করতে গেলো সেখানে
তবে সম্রাট আকবর সবই টের পেয়েছিলেনসেদিন সেলিম ও আনারকলিকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন তিনি
শাহজাদার সঙ্গে প্রেমের অপরাধে সেদিন আকবর আনারকলিকে হত্যা করলেন সেলিমের চোখের সামনে
বহুদিন কেটে গেলোতবে সেলিম তার ভালোবাসার মানুষটিকে ভুলতে পারে নিতাই, সে লাহোরে তার ভালোবাসার মানুষটির স্মরণে তৈরি করলো স্মৃতি সৌধ
স্মৃতিসৌধের এক দিকে লেখা আছে আল্লাহর ৯৯টি নাম
অন্যদিকে লেখা আছে দু'লাইন ফরাসি কবিতাঃ
"তা কিয়ামাত শুকর গুইয়াম কারদিগারি কিশ রা
আহ, গার মান বাজ বিনাম রু ইয়ার-ই-খুশ রা।"
যার বঙ্গানুবাদ হয়ঃ
" একবার, আর একবার দেখতে পাই প্রিয়তমার মুখ যদি
ঈশ্বর তোমার নাম ডেকে যাবে হৃদয় কেয়ামত অবধি।"

লেখকঃ জোহেব

সেদিন খুঁজবে আমায়






সে দিন খুঁজবে আমায়
কবিঃ জোহেব

সেদিন তুমি খুঁজবে আমায়,
বসন্তের ফুলে।
সেদিন তুমি খুঁজবে আমায়,
কোন এক বর্ষা সকালে।
সেদিন তুমি খুঁজবে আমায়,
কোন এক বৃষ্টি বিলাসী বিকেলে।
সেদিন তুমি খুঁজবে আমায়,
শরতের কাশ ফুলে।
কখনো বা খুঁজবে আমায়,
কোন এক জোছনা রাতে।

সেদিন তুমি কোথাও আমায়,
পাবে নাকো খুঁজে।
যদি কখনো কাঁদে মন,
খুঁজে নিয়ো আমার,
আকাশের নক্ষত্রদের মাঝে।
সেদিন কাঁদবে তুমি,
তোমার চোখ হতে গড়াবে অশ্রু।
আবারো বেজে উঠবে আমার সেই,
বেহালার করুণ সুর।
কাঁদবে তুমি ব্যাকুল হয়ে,
গড়িয়ে পড়বে অশ্রু,
তোমার কপোল বেয়ে।

তবে আফসোস-
তখন তোমার অশ্রু,
পারবো না মুছতে আমি।
ততদিনে অন্য কোন জগত,
দিচ্ছে আমায় হাতছানি।
যে জগত হতে,
আজো কেউ ফিরতে পারে নি।

শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

অবহেলা (৬ষ্ঠ পর্ব)






অবহেলা (৬ষ্ঠ পর্ব)
--------------------------------------------------------------------------------

অভ্র বসে আছে লেকের পাড়ে। হাতে কবিতার ডায়েরী। তবে আজকে কি নিয়ে লিখবে খুঁজে পাচ্ছে না। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে সে। পাখিদের উড়ে যাওয়া দেখছে। এখনো সন্ধ্যা হয় নি, তবে তারা নীড়ে ফিরে যাওয়া শুরু করেছে।
আসলে প্রকৃতির মাঝে বৈচিত্রময়তা আছে বলেই পৃথিবী আমাদের কাছে এতো সুন্দর মনে হয়।

হঠাৎ, পেছন থেকে মিলির গলা শোনা গেলো।
মিলিঃ “কি কবি সাহেব কি করছেন।”
অভ্রঃ “কিছু না, বসো।”
মিলিঃ “তা কি লিখলে দেখি।”
অভ্রঃ “কিছুই না।”
মিলিঃ “কেনো? লিখার কোন বিষয় খুঁজে পাচ্ছো না বুঝি?”
অভ্রঃ “হুম।”
মিলিঃ “কেনো?”
অভ্রঃ “আসলে বুঝতে পারছি না। তাছাড়া, আজ কেনো যেনো লিখতে ইচ্ছে করছে না।”
মিলিঃ “হুম। তো কি ইচ্ছে করছে?”
অভ্রঃ “ইচ্ছে করছে এখানেই বসে থাকি। এভাবেই এখানে বসে বসে বিকেলের আকাশে ক্লান্ত পাখিদের নীড়ে ফেরা দেখি।”
মিলিঃ “তবে পাখিরাতো সন্ধ্যা ঘনালে নীড়ে ফিরে। তা হলে কিছু পাখিদের এমন অসময়ে নীড়ে ফিরতে দেখা যায় কেনো?”
অভ্রঃ “এটাই প্রকৃতির বৈচিত্রতা। এ বৈচিত্রতার কারনেই প্রকৃতির সব কিছু আমাদের কাছে ভালো লাগে।এ বৈচিত্রতা না থাকলে প্রকৃতি একঘেয়ে হয়ে যেতো।”
মিলিঃ “হুম। আচ্ছা, তুমি জোছনা পছন্দ করো?”
অভ্রঃ “হুম। আমি জোছনা রাতে বাঁশি বাজাই। জোছনা রাতই বাঁশি বাজানোর জন্য উত্তম। কারন, তখন চাঁদের আলো আর বাঁশির সুর মিলে এক অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি করে।”
মিলিঃ “আচ্ছা, জোছনা রাতেই বাঁশি বাজানোর কারন কী? অন্য সময় বাজাও না কেনো?”
অভ্রঃ“মিলি তুমি হয়তো জানো যে পৃথিবীতে আমার বন্ধুর খুবই সংখ্যা কম। এ কম সংখ্যক বন্ধুদের মাঝে চাঁদ ও আমার বন্ধু। আমি চাঁদের সাথে কথা বলি। তার ভাষা হল জোছনা আর আমার ভাষা হল সুর।”

প্রতিবারের মতো এবার ও মিলি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। প্রতিবারই তার কেনো যেনো অভ্রকে নতুন বলে মনে হয়। প্রিয় মানুষদের প্রতিদিন নতুন করে আবিস্কারের মাঝে আলাদা এক আনন্দ আছে।

To be continued.........
[বিঃদ্রঃ উপন্যাসের পরের অংশটি কাল এই ব্লগে প্রকাশিত হবে।]

লেখকঃ জোহেব।

সুয়া চান পাখি গানের ইতিহাস








সুয়া চান পাখি গানের ইতিহাস

সুয়া চান পাখি! গানটা শুনলেই মনের ভিতরটা হুহু করে কেঁদে উঠে। তবে আমরা কি জানি যে এই গানটির পেছনে রয়েছে এক বেদনাময় ইতিহাস।
“সুয়া চান পাখি” এর অর্থ হল শুয়ে আছে আমার চান পাখি।
এক সময়কার বাউল গায়ক ছিলেন ওস্তাদ উকিল মুন্সি। তিনি তার স্ত্রীকে অসুস্থ অবস্থায় রেখে এক গানের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে খবর এলো যে তার স্ত্রী আর এ পৃথিবীতে নেই।
উনি যে যায়গায় অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সে যায়গাটি ছিলো তার বাড়ি থেকে অনেক দূরে। যার ফলে ফিরতে কয়েকদিন সময় লেগে গেলো।
ততদিনে তার স্ত্রীকে কবর দেয়া হয়ে গিয়েছে। তিনি তার স্ত্রীকে শেষ বারের মতোও দেখতে পারেন নি।
তখন তিনি তার স্ত্রীর কবরের পাশে বসে গেয়েছিলেনঃ
“সুয়া চান পাখি,
আমার সুয়া চান পাখি।
আমি ডাকিতাছি,
তুমি ঘুমাইছ নাকি?

তুমি আমি জনম ভরা,
ছিলাম মাখামাখি।
আজি কেন হইলে নীরব,
মেলো দুটি আখিরে রে,
পাখি।
আমি ডাকিতাছি,
তুমি ঘুমাইছ নাকি?

বুলবুলি আর তোতা ময়না,
কত নামে ডাকি।
তোরে কত নামে ডাকি।।
শিকল কেটে চলে গেলে রে,
শিকল কেটে চলে গেলে,
কারে লইয়া থাকিরে পাখি।
আমি ডাকিতাছি,
তুমি ঘুমাইছ নাকি?

তোমার আমার এই পিরীতি,
চন্দ্র, সুর্য সাক্ষী।
হঠাৎ করে চলে গেলে,
বুঝলাম না চালাকি।
আমি ডাকিতাছি,
তুমি ঘুমাইছো নাকি।”

তখন উকিল মুন্সির গুরু বাউল কবি রশিদ উদ্দীন সে স্থানে ছিলেন। উকিল মুন্সিকে এভাবে কাঁদতে দেখে তাকে সান্তনা দেয়ার জন্য তিনি গেয়েছিলেনঃ

“বিশ্ব জোড়া এই পিরীতি,
সবই দেখছি ফাঁকি রে উকিল মুন্সি।
সবই দেখছি ফাঁকি।।
বাউল রশিদ বলে,
চলরে উকিল।
বাউল রশিদ বলে,
চলরে উকিল।
ওরে উকিল।।
ডাকলেই বা হইবো কি,
তারে ডাকলেই বা হইবো কি?
আমি ডাকিতাছি,
তুমি ঘুমাইছ নাকি?”


লেখকঃ জোহেব।

সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

আজ না হয় নিজেকে নিয়েই লিখলাম


 
 
 
আজ না হয় নিজেকে নিয়েই লিখলাম
-----------------------------------------------------

চারিদিকে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আলোকিত পৃথিবী ধীরে ধীরে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। তেমনি ভাবে দুঃখের অন্ধকার জগতে হারিয়ে যাচ্ছে একটি জীবন। যা হয় তো আর কখনো আলোর মুখ দেখবে না।

জোহেব হাঁটছে লেকের পাড়ে। বুকের বাম পাশের চিন চিনে ব্যাথাটা ধীরে ধীরে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। অতিপ্রিয় মানুষের কাছ থেকে পাওয়া কষ্ট কেউ সহ্য করতে পারে না। এ কষ্টের প্রভাব এতোই তীব্র হয় যে মানুষ তখন কাঁদতে পারে না।

হাঁটতে হাঁটতে নিজের লিখা কয়েকটি কবিতা আওড়ে যায় জোহেব। যে কবিতা গুলো এক সময় প্রিয় এক জনকে উৎসর্গ করেছিলো।
আশেপাশের মানুষগুলো তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কেউ কেউ দেখছে উৎসুক দৃষ্টিতে। কেউ কেউ দেখছে বিস্ময়ের দৃষ্টিতে। তারা ভাবছে যে পাগল প্রলাপ বকছে।

হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পরে গেলো সে। পা খানিকটা কেটে গিয়েছে। তবে তার কোন ব্যাথা অনুভুত হচ্ছে না। তার হৃদয়ের তীব্র ব্যাথার কাছে এ ব্যাথা কিছুই নয়।
আমাদের শরীরের কোন অংশ কেঁটে গেলে রক্তক্ষরণ হয়। যা সবাই দেখতে পায়। তবে হৃদয়ের রক্তক্ষরণ কেউ দেখতে পায় না।

সে উঠে দাঁড়ালো। এরপর কিছুক্ষন লেকের পানির দিকে তাকিয়ে রইলো।
আজ তার মনে হচ্ছে, পৃথিবীতে সত্যিকারের প্রেমীকের স্থান শুধু গল্পে। যেখানে আবেগ গুলো শুধু বইয়ের পাতার মাঝেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে এর কোন অস্তিত্য নেই। ভালোবাসা নামক বস্তুটাকে আজ তার কেবল একটি কুসংস্কার বলেই মনে হয়।

লেখকঃ জোহেব।

তোমার ওই মুখের হাসি




তোমার ওই মুখের হাঁসি
কবিঃ জোহেব
--------------------------------------

তোমার ওই মুখের হাসি,
আমি দেখতে ভালোবাসি।
তোমার ওই চোখের চাওয়া,
আমার মনে দেয় যে দোলা।
জীবনের এই পথে,
চলতে চাই তোমার সাথে।
চলবে কী তুমি এ পথ,
আমারি সাথে?

কখনো যদি হারাই পথ,
খুঁজে দিয়ো তুমি আমায় পথ।
কখনো যদি হারাই আঁধারে,
তুমি খুঁজে দিয়ো আলো আমারে।
এ ভাবে জীবনের পথে,
চলতে চাই তোমার সাথে।
চলবে কী তুমি এ পথ,
আমারি সাথে?