অবহেলা (৭ম পর্ব)
চারি দিকে ফুটে উঠেছে ভোরের আলো। পাখিদের কিচির মিচির
শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো মিলির। কাল রাতে জোছনা দেখতে দেখতে কখন যে বারন্দার ইজি চেয়ারে
ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়াল নেই।
আজ কেনো যেনো তার কবিতা লিখতে ইচ্ছে করছে। ইচ্ছে করছে সব
না বলা কথা গুলো অভ্রকে বলে দিতে। তবে সে তো আর অভ্র নয় যে হাঁটতে হাঁটতে কবিতা
লিখে ফেলবে। কিছুক্ষন বসে বসে কল্পনার জগতে পদচারন করে মিলি। খুঁজতে থাকে ছন্দ।
তবে সব গুলো কথা ছন্দে মিলছে না। ঘর থেকে খাতা এনে লিখলো
৮ লাইনের একটি কবিতা।
আজ অভ্রকে কবিতাটা পাঠাবে সে। মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে
লিখে ফেললো। কয়েকবার পাঠাতে গিয়েও পাঠাতে পারে নি। কেমন যেনো একটা ভয় কাজ করছে তার
মাঝে। অভ্রকে হারানোর ভয়। কিছুক্ষন পর ম্যাসেজটা পাঠিয়েই দিলো। অপেক্ষা করতে থাকলো
ম্যাসেজ এ উত্তর এর। তবে উত্তর এলো না।
বিকেলেঃ
________________
অভ্র বসে আছে লেকের পাড়ে। আজ তার হাতে কবিতার ডায়েরী
নেই। বিকেলের সোনালী আলো গড়িয়ে পড়ছে লেকের পানিতে। সে পানিতে নিজের প্রতিচ্ছবি
দেখছে অভ্র।
“কেমন আছো অভ্র?”
অভ্র ফিরে তাকালো। মিলি দাঁড়িয়ে আছে।
অভ্রঃ“ভালো। বসো...”
মিলিঃ“ম্যাসেজটা পেয়েছো?”
অভ্রঃ“হুম। দেখেছি।”
মিলিঃ“তো...”
অভ্রঃ“মিলি। একটা কথা বলবো?”
মিলিঃ“বলো...”
অভ্রঃ“দেখো মিলি। একে ভালোবাসা বলে না। একে বলে মোহ। এখন
তুমি মোহের ঘোরে বলছো ভালোবাসি। তবে যখন মোহ কেটে যাবে, তখন আর ভালোবাসাটা থাকবে
না।”
মিলিঃ“আমি তো মোহের ঘোরে বলছি না।”
অভ্রঃ“তা সবার মতে তো আমি একজন বিরক্তিকর মানুষ। তা
আমাকে তোমার ভালো লাগলো কি ভাবে?”
মিলিঃ“তুমি মোটেও বিরক্তিকর নও। তুমি এমন একজন মানুষ যে
সবার থেকে আলাদা। সবাই এক পথে চলে। তবে তোমার পথ ভিন্ন। তোমার নিজের পথটা সবার
চেয়ে আলাদা।”
অভ্রঃ“হতে পারে। তবে এ পথে তুমি যে আমার সাথী হতে
চাচ্ছো, তা কি বোকামি নয়?”
মিলিঃ“মোটেও বোকামি নয়।”
অভ্রঃ“নিজের ভালোবাসাটা কে এভাবে অপাত্রে দান করো না।”
মিলিঃ“যে এতো সুন্দর করে লিখতে পারে, সে কখনো অপাত্র হতে
পারে না। যার মাঝে একটা কাঁচের ন্যায় স্বচ্ছ হৃদয় ও শিল্পি মন আছে সে কখনো অপাত্র
হতে পারে না।”
অভ্রঃ“মিলি! তুমি ভুল করছো। আমি হলাম তারাশংকর বন্দোপাধ্যায়ের
কবির মতো। কোন এক গল্পের চরিত্র। এখন তুমি মোহের ঘোরে এসব বলছো। যখন মোহ কেটে
যাবে, তখন আর এই ভালোবাসাটা থাকবে না।”
অভ্র হেঁটে চলে যায়। মিলিও আর কিছু বলে না। বসে বসে তার
চলে যাওয়া দেখে।
To be continued..................
[বিঃদ্রঃ উপন্যাসের পরের অংশটি কাল এই ব্লগে প্রকাশিত হবে]
লেখকঃ জোহেব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন